তৎপুরুষ সমাস

সংজ্ঞা: যে সমাসে পূর্বপদের বিভক্তি লোপ পায় এবং পরপদের অর্থ প্রধান রূপে প্রতীয়মান হয়, তাকে তৎপুরুষ সমাস বলে।

সংজ্ঞা বিশ্লেষণ: ব্যাসবাক্যে পূর্বপদের সঙ্গে যে বিভক্তি থাকবে, সেটা সমস্তপদে লোপ পাবে এবং পরপদের অর্থ প্রাধান্য পাবে।

উদাহরণ ব্যাখ্যা:
চাবাগান। ‘চাবাগান’ অর্থ কী? এর অর্থ- ‘চায়ের বাগান’। এটিই হচ্ছে ‘চাবাগান’-এর ব্যাসবাক্য। তাহলে দেখা যাচ্ছে, ব্যাসবাক্যে পূর্বপদের সঙ্গে ‘এর’ বিভক্তি (চা + এর) যুক্ত আছে; কিন্তু সমস্তপদে (চাবাগান) গিয়ে উক্ত ‘এর’ বিভক্তি লোপ পেয়েছে। আবার, ‘চাবাগান’ বললে আমরা কী বুঝি? চাবাগান কি একটি চা, না-কি একটি বাগান? উত্তর হচ্ছে: ‘চাবাগান’ নিশ্চয় একটি বাগান। অর্থাৎ এখানে পরপদ (বাগান)-এর অর্থই প্রাধান্য পাচ্ছে।
যেহেতু পূর্বপদের বিভক্তি লোপ পাচ্ছে এবং পরপদের অর্থ প্রাধান্য পাচ্ছে, সুতরাং এটি একটি তৎপুরুষ সমাস।

ব্যাসবাক্য গঠন: অর্থ বুঝে পূর্বপদের সঙ্গে একটি বিভক্তি যুক্ত করে দিলেই এ সমাসের ব্যাসবাক্য হয়ে যায়।
যেমন: বনমধ্যে। এ পদটির ব্যাসবাক্য গঠনের জন্য আমরা এখন এর পূর্বপদ ‘বন’-এর সঙ্গে প্রত্যেকটি বিভক্তি যুক্ত করে দেখবো কোনটা এর অর্থের সঙ্গে মেলে।
দ্বিতীয়া ও চতুর্থী বিভক্তি (কে/রে): বনকে মধ্যে
পঞ্চমী বিভক্তি (হতে/থেকে/চেয়ে): বন থেকে মধ্যে
ষষ্ঠী বিভক্তি (র/এর): বনের মধ্যে
সপ্তমী বিভক্তি (এ/য়/তে): বনে মধ্যে
এখন বলুন তো, ওপরের বিশ্লেষণগুলোর মধ্যে কোনটি গ্রহণযোগ্য বলে মনে হচ্ছে? ঠিক ধরেছেন- ‘বনের মধ্যে’। ‘বনমধ্যে’ বলতে তো ‘বনের মধ্যে’ই বোঝায়। সুতরাং এর ব্যাসবাক্য হবে ‘বনের মধ্যে’।

তৎপুরুষ সমাসের আরও অনেক উদাহরণ পেতে চলে আসুন এখানে