উপমান বনাম উপমিত

উপমান ও উপমিত কর্মধারয় সমাস নিয়ে প্রায়শই দ্বিধাদ্বন্দ্বের সৃষ্টি হয়। একটিমাত্র বাক্যে আমরা আজ এ সংশয় দূর করে নেবো।


আমরা নিশ্চয় জানি- একাধিক ব্যক্তি বা বস্তুর মধ্যে তুলনা বোঝালে সাধারণভাবে সেটা উপমান বা উপমিত কর্মধারয় সমাস হয়।

কীভাবে চিনবো?
বিশেষণ (দোষ, গুণ, অবস্থা ইত্যাদি যে-কোনো বৈশিষ্ট্য) উল্লেখ থাকলে উপমান কর্মধারয় সমাস হবে; বিশেষণ উল্লেখ না থাকলে হবে উপমিত কর্মধারয় সমাস।

উদাহরণ ও ব্যাখ্যা:
উপমান কর্মধারয় সমাস: ভ্রমরকৃষ্ণ কেশ।’ভ্রমর’ ও ‘কেশ’ বিশেষ্য পদ। এদের বৈশিষ্ট্য (বিশেষণ) হলো, এরা দুজনেই ‘কৃষ্ণ’ বা কালো।বজ্রকঠোর।’বজ্র’ বিশেষ্য পদ। এর বৈশিষ্ট্য (বিশেষণ) হলো, এটি ‘কঠোর’।
উপমান কর্মধারয় সমাসের আরও উদাহরণ: তুষারশুভ্র (বিশেষণ: ‘শুভ্র’ বা সাদা), অরুণরাঙা (বিশেষণ: ‘রাঙা’ বা রঙিন), বকধার্মিক (বিশেষণ: ধার্মিক), বজ্রকঠোর (বিশেষণ: কঠোর), কচুকাটা (বিশেষণ: কাটা), কাজলকালো (বিশেষণ: কালো), কুসুমকোমল (বিশেষণ: কোমল), হিমশীতল (বিশেষণ: শীতল), মিশকালো (বিশেষণ: কালো)

উপমিত কর্মধারয় সমাস: মুখচন্দ্র।’মুখ’ ও ‘চন্দ্র’ বিশেষ্য পদ। এখানে এদের কোনো বৈশিষ্ট্য বা বিশেষণ উল্লেখ নেই।)পুরুষসিংহ।’পুরুষ’ ও ‘সিংহ’ বিশেষ্য পদ। এখানে এদের কোনো বৈশিষ্ট্য বা বিশেষণ উল্লেখ নেই।
উপমিত কর্মধারয় সমাসের আরও উদাহরণ: করপল্লব, করকমল, পদ্মচক্ষু, বজ্রকণ্ঠ, সোনামুখ, বাহুলতা, চরণকমল, নয়নপদ্ম।

এ দুটো সমাসের ব্যাসবাক্য করাও খুব সহজ। অর্থ বুঝে ব্যাসবাক্যের শেষে বা মাঝে ‘ন্যায়’ বসিয়ে দিলেই হয়ে যায়।
যেমন: বজ্রকঠোর = বজ্রের ন্যায় কঠোর, মুখচন্দ্র = মুখ চন্দ্রের ন্যায়।