লেখিকা/শিক্ষিকা/অধ্যাপিকা- কোথায় গেল?

এমন অনেকবারই দেখেছি- ‘বুদ্ধিমান মেয়ে’ বললে লোকে ভুল ধরে বসেন। তাদের বক্তব্য হলো- ‘বুদ্ধিমান’ তো পুরুষবাচক; সুতরাং এখানে ‘বুদ্ধিমতী নারী’ লিখতে হবে। এটি আসলে একটি বহুল প্রচলিত ভুল ধারণা। চলুন, ব্যাপারটা বুঝে নেয়া যাক।

নিয়ম হচ্ছে: বাংলা ভাষায় কখনও স্ত্রীবাচক বিশেষণ ব্যবহার করা যাবে না। স্ত্রীবাচক বিশেষণ ব্যবহৃত হবে সংস্কৃতে। অর্থাৎ সংস্কৃতে ‘সুন্দরী বালিকা’ লেখা গেলেও বাংলা ভাষায় তা লেখা যাবে না। বাংলা ভাষায় লিখলে, লিখতে হবে ‘সুন্দর বালিকা’।

উদাহরণসহ ব্যাখ্যা:
বাংলায় যখন বিশেষণরূপে ব্যবহৃত হবে, তখন স্ত্রীবাচক শব্দ লেখা যাবে না।
যখন বলছি- ‘লেখক বলেছেন’; তখন ‘লেখক’ বিশেষণ নয়, বিশেষ্য। আবার, যখন বলছি-‘লেখিকা বলেছেন’; তখনও ‘লেখিকা’ বিশেষণ নয়, বিশেষ্য। বিশেষ্যরূপে ব্যবহারের ক্ষেত্রে স্ত্রীবাচক ও পুরুষবাচক- প্রয়োজন অনুযায়ী দুটোই ব্যবহার করা যাবে; কোনও সমস্যা নেই।

কিন্তু বিশেষণরূপে ব্যবহারের ক্ষেত্রে সব সময় শব্দের পুরুষবাচক রূপটিই ব্যবহার করতে হবে।
যেমন ধরুন: ‘শিক্ষিতা নারীরা অধিকার-সচেতন হয়ে থাকেন’ কখনোই লেখা যাবে না; কেননা এখানে ‘শিক্ষিতা’ বিশেষণ (‘নারীরা’-এর গুণ বোঝাচ্ছে)। সুতরাং লিখতে হবে ‘শিক্ষিত নারীরা অধিকার-সচেতন হয়ে থাকেন’। এখানে উল্লিখিত ‘শিক্ষিত’-রা নারী বা পুরুষ যেটাই হোন না কেন, ‘শিক্ষিত’ই লিখতে হবে।

দ্রষ্টব্য: পেশার নাম লেখার ক্ষেত্রে লিঙ্গান্তর না করাই কর্তব্য। অর্থাৎ পেশা হিসেবে ‘শিক্ষিকা’, ‘লেখিকা’ ইত্যাদি না লিখে নারী-পুরুষ উভয়ের ক্ষেত্রেই ‘শিক্ষক’, ‘লেখক’ এভাবে লেখা সংগত।