‘ভালো’, না-কি ‘ভাল’?

শব্দের শেষে ও-কার ব্যবহার করবো, না-কি করবো না? এটি একটি বহুল জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন খুব সহজে আজ আমরা এর সমাধান করে নেবো, চলুন।

বাংলায় যে-সব শব্দে শেষের অ-ধ্বনির উচ্চারণ ও-এর মতো হয়, সে-সব ক্ষেত্রে (অর্থবিভ্রান্তি বা উচ্চারণ নিয়ে সংশয় সৃষ্টির সম্ভাবনা থাকলে) ও-কার ব্যবহার করতে হবে।

উদাহরণ ও ব্যাখ্যা:
১. ভালো, না-কি ভাল?
আমরা জানি, বাংলায় ‘ভাল’ বানানে স্বতন্ত্র একটি শব্দ আছে, যার অর্থ- কপাল বা ভাগ্য। এ শব্দটির উচ্চারণ ‘ভাল্’। এখন, উত্তম বোঝাতেও যদি আমরা ‘ভাল’ বানানটি ব্যবহার করি, তাহলে বিভ্রান্তি সৃষ্টির সুযোগ থেকে যায়। সে কারণে উত্তম বোঝাতে ‘ভাল’ না লিখে ‘ভালো’ লিখতে হবে।
২. মতো, না-কি মত?
আমরা জানি, বাংলায় ‘মত’ বানানে স্বতন্ত্র একটি শব্দ আছে, যার অর্থ- মনের ভাব, সম্মতি, সিদ্ধান্ত (ইংরেজিতে ‘Opinion’)। এ শব্দটির উচ্চারণ ‘মত্’। এখন, তুলনীয় বা ‘একই রকম’ বোঝাতেও যদি আমরা ‘মত’ বানানটি ব্যবহার করি, তাহলে বিভ্রান্তি সৃষ্টির সুযোগ থেকে যায়। সে কারণে তুলনীয় বা ‘একই রকম’ বোঝাতে ‘মত’ না লিখে ‘মতো’ লিখতে হবে।
৩. এত, না-কি এতো?
এই বানানটির ক্ষেত্রে আমরা দেখতে পাচ্ছি- ‘এত’ বানানে বাংলায় একটিইমাত্র শব্দ আছে, যার অর্থ- এই পরিমাণ বা অনেক। ‘এতো’ বানানটি যারা লেখেন, তারাও ‘এই পরিমাণ বা অনেক’ অর্থেই শব্দটি ব্যবহার করে থাকেন। আবার, ‘এত’ শব্দটির উচ্চারণ ‘অ্যাতো’; এটাকে কেউ ‘অ্যাত্’ উচ্চারণ করেন না। কেননা ‘অ্যাত্’ উচ্চারণে বাংলায় কোনো শব্দ নেই।

যেহেতু দুটো বানান একই অর্থে ব্যবহার করা হয়, আবার উচ্চারণেও কোনো বিভ্রান্তি সৃষ্টির সুযোগ নেই; তাই এখানে অকারণে ও-কার ব্যবহার করা যাবে না। সুতরাং এই শব্দটির বানান হবে ‘এত’।