‘ছিল’, না-কি ‘ছিলো’?

ক্রিয়ার শেষে ও-কার ব্যবহার করবো, না-কি করবো না? এ প্রশ্নটি প্রায়ই শুনতে পাওয়া যায়। এর একটি সহজ সমাধান আজ শিখে নেবো, চলুন।

ছিল, দিলো, হতো, নিল- এ ধরনের ক্রিয়াগুলো নাম পুরুষের ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়। নাম পুরুষ বলতে ‘অনুপস্থিত’ ব্যক্তি বা কোনো নামকে বোঝায়। যেমন: সে, তারা, রহিম, করিম। ওপরের ক্রিয়াগুলো এ ধরনের কর্তার সঙ্গেই বসে। যেমন: সে ভালো মানুষ ছিল। রহিম আমাকে একটি ফুল দিলো।
এ ধরনের ক্রিয়ার শেষে ও-কার ব্যবহার করবো কি না, সেটা ব্যাখ্যাসহ বুঝে নেওয়া যাক।

উদাহরণ ও ব্যাখ্যা:
১. হতো, না-কি হত?
আমরা জানি, বাংলায় ‘হত’ বানানে স্বতন্ত্র একটি শব্দ আছে, যার অর্থ- মৃত, মন্দ, বাধাপ্রাপ্ত (আহত, নিহত, হতভাগ্য)। যেহেতু ‘হত’ বানানে ভিন্ন অর্থবোধক একটি শব্দ আছে, তাই ক্রিয়া হিসেবে ‘হত’ না লিখে ‘হতো’ লিখতে হবে। যেমন: তুমি এলে খুব মজা হতো (‘হত’ নয়)।
২. দিলো, না-কি দিল?
আমরা জানি, ‘দিল’ (উচ্চারণ: দিল্) বানানে ব্যবহৃত হয় স্বতন্ত্র একটি শব্দ আছে, যার অর্থ- হৃদয়, মন। যেহেতু ‘দিল’ বানানে ভিন্ন অর্থবোধক একটি শব্দ আছে, তাই ক্রিয়া হিসেবে ‘দিল’ না লিখে ‘দিলো’ লিখতে হবে। যেমন: সে আমাকে একটি বই উপহার দিলো (‘দিল’ নয়)।
৩. ছিল, না-কি ছিলো?
এই বানানটির ক্ষেত্রে আমরা দেখতে পাচ্ছি- ‘ছিল’ বানানে বাংলায় একটিইমাত্র শব্দ আছে; ‘ছিল’ বানানে ভিন্ন অর্থবোধক অন্য কোনো শব্দ নেই। তাই, এখানে ও-কার ব্যবহারের কোনও প্রয়োজন নেই। সুতরাং এটিকে ‘ছিলো’ না লিখে ‘ছিল’ লিখতে হবে
৪. নিল, না-কি নিলো?
এই বানানটির ক্ষেত্রেও আমরা দেখতে পাচ্ছি- ‘নীল’ বানানে বাংলায় একটি শব্দ থাকলেও ‘নিল’ বানানে একটিইমাত্র শব্দ আছে; ‘নিল’ বানানে ভিন্ন অর্থবোধক অন্য কোনও শব্দ নেই। তাই, এখানে ও-কার ব্যবহারের কোনও প্রয়োজন নেই। সুতরাং এটিকে ‘নিলো’ না লিখে ‘নিল’ লিখতে হবে।

দ্রষ্টব্য: কিছু কিছু ক্রিয়ার ক্ষেত্রে দু-রকম বানানই ব্যবহার করা যায়। যেমন: করল/করলো, বলল/বললো, চলল/চললো।