‘চীন’ কেন ‘চিন’ নয়?

অনেকেই প্রশ্ন করে থাকেন- ‘চীন’ একটি বিদেশি শব্দ হওয়া সত্ত্বেও কেন এ শব্দটির বানানে ঈ-কার হবে? কেননা আধুনিক বাংলা বানানের নিয়মানুসারে- বিদেশি শব্দের বানানে ঈ- কার লেখা যাবে না।
বলার অপেক্ষাই রাখে না যে, এ যুক্তিতে ‘শ্রীলঙ্কা’ বানানটিও বাতিল হয়ে যায়।
চলুন, বিষয়টি একটু বিশ্লেষণ করা যাক।

মনে রাখতে হবে: দেশের নাম হলেই সেটা বিদেশি শব্দ নয়।

শুরুতেই আসা যাক ‘শ্রীলঙ্কা’র কাছে।
‘শ্রীলঙ্কা’ শব্দটি গঠিত হয়েছে ‘শ্রী’ ও ‘লঙ্কা’- এ দুটো শব্দ নিয়ে। ‘শ্রী’ ও লঙ্কা’- দুটোই তৎসম (সংস্কৃত) শব্দ। যেহেতু সংস্কৃত ‘শ্রী’-তে ঈ-কার হয়, তাই অবধারিতভাবে ‘শ্রীলঙ্কা’ বানানেও ঈ-কার বহাল থাকবে।

‘চীন’-সমাচার:
পূর্ব-এশিয়ার দেশ ‘চীন’, যার প্রকৃত নাম ‘চায়না’ (China)। সুতরাং দেখাই যাচ্ছে- ‘চীন’ সরাসরি উক্ত দেশটির হুবহু নাম নয়। প্রকৃতপক্ষে ‘চীন’ একটি নিখাদ তৎসম (সংস্কৃত) শব্দ। যেহেতু এটি একটি তৎসম শব্দ, তাই এ শব্দটির বানানে ঈ-কার বসার পূর্ণ স্বাধীনতা আছে।

আরও একটু কথা:
দক্ষিণ এশিয়ায় একটি দেশ আছে, যার নামের বানানে ঈ-কার হয়। দেশটির নাম ‘মালদ্বীপ’।
হ্যাঁ, আপনি একদম ঠিক ভাবছেন। এই দেশটির নামে যে দুটি শব্দ যুক্ত রয়েছে (‘মাল’ ও ‘দ্বীপ’), তারা উভয়েই তৎসম (সংস্কৃত) শব্দ। সুতরাং ‘মালদ্বীপ’ বানানে যে ঈ-কারটি ব্যবহৃত হচ্ছে, সেটিও সম্পূর্ণরূপে শুদ্ধ।