‘ইদ’, না-কি ‘ঈদ’?

‘ইদ’ বানানটি নিয়ে অনেক যুক্তি-কুযুক্তি-তর্ক-বিতর্ক-কুতর্ক হয়েছে। এর একটি সমাধানযোগ্য ব্যাখ্যা আপনারা ভিডিওটিতে দেখতে পাবেন। আমি এখানে ছোটো করে একটু আলোচনা করতে চাই অন্য দুটো শব্দ নিয়ে, যে শব্দ দুটোকে অবলম্বন করে কেউ কেউ ‘ঈদ’ এর পক্ষে ‘যুক্তি’ উপস্থাপনের চেষ্টা করছেন। শব্দ দুটো হচ্ছে ‘চীন’ ও ‘বাংলা’।

‘চীন’ ও ‘বাংলা’র বিষয়ে কেউ কেউ বলছেন যে, ‘প্রচলিত’ বলে এ বানান দুটোকে মেনে নেয়া হয়েছে। এ ‘ব্যাখ্যা’ সঠিক নয়।

প্রথমে ‘চীন’-এর কাছে আসা যাক। এ শব্দটির বানান ‘চীন’ ও বিকল্পে ‘চিন’- দুটোই লেখা যায়। কিন্তু যেহেতু সংস্কৃত ‘চিন’ অর্থ চিহ্ন এবং বাংলা ‘চিন’ অর্থ জানাশোনা, তাই দেশের নাম হিসেবে ‘চিন’ লিখলে অর্থবিভ্রান্তির সুযোগ থেকে যায়। তবে কেউ যদি মনে করেন যে তার লিখিত বাক্যটিতে অর্থবিভ্রান্তির সুযোগ নেই, তাহলে ‘চিন’ ব্যবহার করতেই পারেন। আরেকটি কথা বলে রাখা প্রয়োজন। যে যুক্তিতে তারা ‘চীন’-এর বিরুদ্ধে উঠেপড়ে লেগেছেন, সে যুক্তিটি এক কথাতেই বাতিল করে দেয়া যায়। কেননা, ‘চীন’ ‘সরাসরি’ বিদেশি শব্দ নয়।

এবার আসা যাক ‘বাংলা’য়। প্রথমত, বাংলা বানানের নিয়মানুসারে, সন্ধির নিয়মে গঠিত নয় এমন শব্দগুলোতে মাঝে অনুস্বার ব্যবহার না করে ঙ ব্যবহার করতে হবে। সে অনুযায়ী ‘বাংলা’ শব্দের সঠিক বানান ‘বাঙলা’। এটি কেউই অস্বীকার করেন না; এবং এটি ব্যবহারেও কোনো গোঁড়ামি নেই। ঢাকার মিরপুরে সরকারি বাঙলা কলেজ-এর মূল ফটকের সামনে গিয়ে কলেজের নামফলকের দিকে তাকালেই সেটা বুঝবেন। এমনকি বাংলা ভাষাতত্ত্বের ওপর লিখিত উচ্চতর শিক্ষার বইগুলোতেও ‘বাঙলা’র ব্যবহার হরহামেশাই হয়।

কিন্তু ‘বাংলা ও ‘বাংলাদেশ’ শব্দ দুটির ঐতিহাসিক মূল্য রয়েছে। আশা করি, এ ব্যাপারে দ্বিমত করার কোনও সুযোগ নেই। কেবল এই দুটি শব্দের ক্ষেত্রে এর ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট বিবেচনায় ও ইতিহাসের উপাদান হিসেবে এর মূল্য বিবেচনায় ‘বাংলা’ ও ‘বাংলাদেশ’ লেখা সংগত। বলার অপেক্ষাই রাখে না যে, ‘ঈদ’ বানানের ক্ষেত্রে এমন কোনো যুক্তিই খাটবে না।
বাদবাকি কথা ভিডিয়োতে।